সিলেট ভিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কম: রাধারমণ স্মরণোৎসবের শেষ দিনে ভারতের প্রখ্যাত লোকব্যান্ড দল অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য আসায় বিকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে সমবেত হন। গতকাল সন্ধ্যায় স্মরণ সভার মধ্য দিয়ে তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। গভীর রাতে ভারতের প্রখ্যাত লোকব্যান্ড দল দোহার মঞ্চ মাতায়। এরপরই সাঙ্গ হয় তিনদিন ব্যাপী রাধরমন স্মরণোৎসব।আলোচনা সভায় অতিথি আলোচক ছিলেন সাবেক শিক্ষা সচিব, সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য (পিএসসি) কবি ড. মোহাম্মদ সাদিক, রাধারমণ গবেষক অধ্যাপক নন্দলাল শর্মা, নারীনেত্রী শীলা রায় প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন জেলা কালচারাল কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জুরুল হক পাভেল।স্মরণ সভার অতিথি আলোচক ড. মুহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘রাধারমণ যে ভালোবাসে সেই রাধারমণ। যারা রাধারমণকে নিয়ে কাজ করবেন তারাই রাধারমণ’।তিনি বলেন, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষদের দারিদ্র ছিল, দু:খ ছিল, অনাহার ছিল, অসম্ভব কষ্ট করতে হয়েছিল’। তখনকার সময়ে ইবনে বতুতা ১০০ মোহর দিয়ে ঘোড়া কেনার পরিবর্তে ১ দোহর দিয়ে মানুষ কিনেছিলেন। তিনি বলেন, ১৭৭৬ বঙ্গাব্দে শুধু খেতে না পেয়ে বাংলার অর্ধেক মানুষ মারা গিয়েছিল। কিন্তু জ্ঞানের অভাব ছিল না। বাংলাদেশের মানুষ এখন আর না খেয়ে, খালি পেটে থাকে না। আমি আমাদের পূর্বপুরুষদের স্মরণ করি, যাদের অপরিসীম ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ অর্জন করেছি’।তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার প্রকৃতি আমাদের ভাবুক করে তুলেছে। রাধারমণ কিন্তু কাগজে গান রচনা করেননি। তার গান কাগজে প্রকাশিত হয়নি। মনের মাধুরি মিশিয়ে রাধারমণ গেয়েছেন প্রাণ ভরে। এর মধ্যে করেছেন ঈশ্বর সাধনা। কিন্তু মনের মাধুরি নিয়ে এ সাধনায়ও রয়েছে দুটি সমস্যা। একটি ভালো পরবর্তীতে এটি ফুলে ফেঁপে উঠে আর অন্যটি আশংকার গানের শুদ্ধ রূপ-রস-তাল-লয় ঠিক থাকে না’।তিনি রাধারমণের জন্ম মৃত্যু নিয়ে মতবেভেদের কথা উল্লেখ করে বলেন, রাধারমণের জন্ম ও মৃত্যু আমাদের কাছে কোন সমস্যা নয়। আমরা তার সুরে কথা বলব, গান গাইব। রাধারমণ ছিলেন জাত পাতের উর্ধ্বে। আমি একটি কথাই বলব সব কিছুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খোঁজা অর্থহীন। রাধারমণ নিজের ভক্তদের নিজের মৃত্যুর পূর্বে বলেছেন তিনি মারা যাবেন। তিনি নিজে বলেছেন তাকে সমাহিত করার জন্য। কিন্তু কট্টর ধর্মান্ধগোষ্ঠীর বিরোধীতার কারণে তিনি পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন বলে কথিত রয়েছে। তাঁর দেহ আর পাওয়া যায় নি। আমার মনে হয় তিনি আমাদের অস্তিত্বের সাথে মিশে গিয়েছেন। তাইতো এখানকার মানুষ তিনদিন ধরে গান শুনছেন’। আলোচনা সভার পর শুরু হয় স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গীতানুষ্ঠান। গভীর রাতে ভারতের প্রখ্যাত লোকব্যান্ড দোহার।
এছাড়াও নিম্নের সংবাদগুলো দেখতে পারেন...
বিশ্বনাথে ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি মেম্বার গ্রেফতার
সিলেটের বিশ্বনাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে উপজেলার দৌলতপুর ইউপির ১নং ওয়ার্ডে মেম্বার …